Monday, October 30, 2006

নামহীন (৩০.১০.০৬)

আবর্জনা স্তুপ চুঁইয়ে পড়ে গলে যাওয়া শহুরে আলো,
লাল আস্তরনে ঢেকে থাকে ক্ষুধার্ত খাদ্য,
দামী রেস্তোরার সুগন্ধি উচ্ছিষ্টে ভাগ বসায়
বহু পেট, হাড় জিরজিরে কঙ্কালসমষ্টি।
গলা বেয়ে নেমে আসা চাপা হিংস্র গর্জন
চোখের পলকে দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয় মানুষ আর কুকুরের।
হাত আথবা সরাসরি ঠেলে দেওয়া মুখ
গোগ্রাসে শেষ করে দেয় টাকায় ছাপান খাবার!

রাতের আলো বড় মায়াবী, উন্নত, অধীর অথবা উদ্ধত,
গোলাকার বৃত্তপরিসরে নিষিদ্ধ সমস্ত স্নিগ্ধতা,
আলগোছে এড়িয়ে যাওয়া চাঁদের আলো
পাশ কাটিয়ে কখন যেন চলে গেছে নদীর চরে!

রাস্তার মাঝে রেখে যাওয়া গাড়ির চাকার দাগ
মন্দিভূত করে দেয় জল অথবা রক্তের সনাক্তকরন বৈশিষ্ট।
শ্বাপদ চোখে চেয়ে দেখি আবর্জনার স্তুপ,
পরজীবি প্রাণিদের উচ্ছাস আসে নাকে, দুর্গন্ধময়!
জিনগত বৈশিষ্ট্যে আমরা ক্যামেলিয়া,
নিয়মিত রক্তপান শেষে ছুঁড়ে দিই সহানুভুতি।
প্রচ্ছদ ছাপা হয় রঙিন মোড়কে,
শুষে নেওয়া জমাট রক্তে বানান হয় সোনালী মুর্তি, পুরস্কার!

তীব্রভাবে বসে যায় আমাদের শ্বাপদ দাঁত
শিকারের মাংসে, শিরা বা ধমনীতে।
লালা বেয়ে চলে যায় বিষাক্ত জীবানু, সার্বিক হিংস্রতায়।
তবুও প্রতিরাত্রে এসিডের মতো লাল ইলেকট্রিক আলো
চুঁইয়ে পড়ে আবর্জনা স্তুপে, গলিয়ে দেয় সবকিছু।
আবর্জনা বাড়ে আবর্জনাস্তুপে, ক্রমশঃ বাড়ে মৃত উচ্ছিষ্টেরা,
আও বাড়ে সেগুলো ঘিরে থাকা পরজীবির দল।
ওরা শেষ হয় না, আমরা পারিনা!
আমরা মারি ওদের, আমরা মারি আমাদের,
আমাদের মৃতদেহ খেয়ে বাঁচি আমরা মৃতভোজী,
ওদের মতো সালোকসংশ্লেষ জানিনা!

আর সূর্য উঠলে ওরা মেলে দেবে ওদের ডাল-পাতা,
ঝাঁকরা ডালে ফোটাবে ফুল, থোকা থোকা ফল,
আর আমরা বাঁচব এই পৃথিবীতে
কোন এক সংগ্রহশালার প্রস্তরিভূত জীবাস্ম হয়ে!

Tuesday, October 17, 2006

নামহীন (১৩.১০.০৬)

নির্দিষ্ট অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘেরাটোপে দিনকাটে,
নিয়মিত মৈথুন শেষে স্বেদাক্ত শরীর
উথালপাথাল বিছানার চাদরের প্রতিটা ভাঁজে
জমে থাকা হতাশা আর বৈরাগ্য মিশে যায় আমার ঘামে।

জমাট বাঁধা অন্ধকার ছুঁয়ে খুঁজে বের করা কথা,
অস্ফুটে শুস্ক গলায় উচ্চারিত তোমার নাম
আর যতকিছু আমি বিড়বিড় করে বলে চলি
কামবিযুক্ত আমার অন্ধকারাচ্ছন্ন গুহা খুঁড়ে।

যতকিছু প্রত্নতত্ব নিদর্শন আমি সংগ্রহ করি,
এক আঁজলা স্বান্তনাও কী তার মধ্যে সামিল?
মাথার মধ্যে এঁকে যাওয়া যত সাদা-কালো অক্ষর
তোমার আমার কথোপকথনের ফসিল হয়ে থাকে।

অবাধ্য তুমি আর দুর্বোধ্য আমির মধ্যে শতাব্দীব্যপী দূরত্ত্ব
নিমেষে উড়ে যাওয়া কোন সময়যানের ও
চোখ এড়িয়ে যায়, সন্তর্পনে, নিঃশব্দে,
হয়তো বা খুবই নির্দিষ্টভাবে তোমার ইচ্ছায়, আমার অলক্ষ্যে।

আকাশগঙ্গায় এখন প্লাবন নতুন তারাদের ভীড়ে,
ছড়িয়ে পড়া আলোয় আমার বিযুক্তি নতুন কিছু নয়!
অথচ দিন-প্রতিদিনের লেনদেন শেষে করা হিসাবরক্ষন
তার কিছু প্রমান রেখে যায় না, অথবা কোন সূত্রও।

আর তা রেখে যাবেই বা কেন? কোন কারন তো থাকা চাই!
তুমি ফুটে ছিলে অথৈ দীঘিতে ফুটফুটে শালুক পাশে,
হঠাৎ আনা আমার ঢেউ তোমাকে খানিক দোলালেও
সরাতে পারে না, তেমনি থাকে তোমার মদমত্ত মরালগ্রীবা।

আমি পড়ে রই পথপাশে, অবহেলায় ধূলা-ধূসর,
একখন্ড বাসী মাংসের টুকরোর মতো ধিকি-ধিকি করে আমার হৃদয়
যা কোনও একসময় রক্তসঞ্চারিত করত আমার শরীরে
নিয়ে আসত তাপ আমার প্রতিটা অঙ্গে, কোষ-কনিকায়।

ধীর চোখে চেয়ে আমি আরও দৃঢ় হই,
তুমি জাননা, মানুষ বাঁচার জন্য কতদূর যেতে পারে!
নির্বোধ জীবন-যাপন স্বপ্ন শেষে ঘুম ভাঙলে
নিয়মিত কিছু কর্তব্য, সংসার আর যৌনতার হাত থেকে বাঁচার জন্য।

আমি হাত বাড়াই আমার হাতের দিকে,
রঙভেজা তুলির মতো হালকা টানে এঁকে দিই একটা স্বপ্ন,
ফিন্‌কি দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে নীলচে রক্ত
আমার জামায় তখন রক্তের দাগ, মুখের ভেতর রক্তের তেতো স্বাদ।

ধীরে-ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আমার শরীর,
চোখের কোনে খেলে যায় বৃষ্টি ভেজা স্বপ্ন,
তোমার হাতে আমার হাত, মুছে যায়, এটাই ভবিতব্য!
কে বলেছে তোমায়, মানুষ একবারই আত্মহত্যা করতে পারে!

Sunday, October 08, 2006

নামহীন (০৭.১০.০৬)

পেঁজা তুলোয় আমি উড়ে চলি,
হাল্কা হাওয়ায় পাল তোলে আমার মেঘ,
হাত বাড়িয়ে তুলে নিই একমুঠো বন্ধুত্ত্ব,
উষ্ণতা আমার মাথায়-মুখে-পিঠে।

নিতান্ত অভ্যাসবশে এলিয়ে দিই শরীর
ফুলের ওপরে হঠাৎ, নিশ্চুপে,
দলবদ্ধ ঘেরাটোপে বসাই সাজান সংসার,
রুক্ষতা ভীষন অপ্রিয়, সবসময়!

একফোঁটা শিশির পড়লে চোখে হঠাৎ
ঘুম ভেঙ্গে যায় মৃদু শীতলতায়,
আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসি আলোয়,
একবুক নিশ্বাস নিয়ে ডানা মেলে উড়ি, সশব্দে।

উড়ে যাই তোমার দিকে মৃদু গুঞ্জনে,
গুন গুন করি তোমাকে ঘিরে
মাথা-পিঠ কখনও বা কোমর।
অগোছাল ভাবে উড়ে উড়ে সংগ্রহ করি তোমার বিরক্তি।

উড়ি আমি আবার বসি তোমার লাল-ছোপ শাড়ির পাড়ে
মৃদু দোদুল্যমানতায় দুলি আমি,
আমার মুখ ছুঁয়ে যায় তোমার মসৃন ত্বক,
তোমার শরীর জুড়ে তখন আবছায়া কিছু ছায়া!

তীব্র ঝাঁকুনিতে আমি মুহুর্তে একরাশ হাওয়া
তোমার ভয়ার্ত মুখ আর স্খলিত আঁচল ঘিরে থাকি,
অতর্কিতে জড়িয়ে ধরি তোমার বুক-পেট-উরু,
উত্তেজিত তোমার প্রতিটি ঘামবিন্দু জুড়ে আমি!

নিভৃত কল্পনা জুড়ে আমার বাস্তব
অকথ্য দূরত্ত্ব আর পারিপার্শিকতায় ঘেরা,
ক্ষয়হীন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমি বহুদূরে একা,
প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরনের রোজনামচা।

তবু পুনরাবৃত্তি ঘটে, প্রতিটি কল্পনা
হতে চায় বাস্তব আমার মনের হাত ধরে,
তাই তোমাকে নিয়েই আমার সব কল্পনা,
তোমাকে নিয়েই সব বাস্তব!

Friday, October 06, 2006

নামহীন (০৬.১০.০৬)

নিঃশব্দে একটা রাত্রি পেরোই আমি। বিনিদ্র কিছু স্বপ্ন চোখের অগোচরেই থেকে যায়। ভারী হয়ে আসা চোখের পাতা দুঃসাহসে চাইতে পারে না। বিনিদ্র রাত স্বপ্নে জাগা থাকে দিবাজাগরনে। রাত কুঁড়িরা যখন মেলে সুগন্ধ পাখা, চাঁদের চোখ তখন ঢুলু ঢুলু। উৎকন্ঠায় কাটা একটা রাত হাজারটা বছরের সমান। সময়ের হিসাব কে রাখে? হিসাবের খাতায় লেখা থাকলে দেখা যেত কত হাজার হাজার বছর আমি কাটিয়ে এসেছি! জোর করে বুঁজে থাকা অবাধ্য চোখ জুড়ে আলকাতরার প্রলেপ। মাথার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে প্রচন্ড চিৎকার। এই পৃথিবীর থেকে ঘুমের দেশ বহু-বহু দূরে! জোর করে মিশিয়ে দেওয়া রক্তের এলকোহল শ্রান্ত হয়ে পড়ে। রক্তের গতিবেগ হয় দ্রুত থেকে দ্রুততর। হাতের তালুতে নির্জীব হয়ে পড়ে থাকা আধুনিক ফোনটা প্রহর গুনতে ভুলে গেছে। দেওয়ালে টাঙান ঘড়িটার কাঁটার প্রতিটা পদক্ষেপ অবিন্যস্ত, অবাধ্য! রাতচরা পাখীটা গাছের ডালে বসে অপেক্ষমান প্রহর শেষের। সমস্ত পৃথিবী এখন গভীর ঘুমে। আমার পৃথিবী থেকে ঘুমের দেশ বহু-বহু দূরে! তোমার স্খলিত হাত অবচেতনে জড়িয়ে আছে এক পশলা বাতাস। তোমার স্বপ্ন জর্জরিত শ্বাস ঠোঁট-বুক বেয়ে চলাচল করে। যান্ত্রিক হাওয়ার ঘূর্ণায়মান প্রবাহ তোমার পা-ঊরু-জঙ্ঘা বেয়ে ধাবমান। স্বপ্নভেজা তোমার মুখ তীব্র পরিতৃপ্তি প্রসূত। এখন তুমি আকাশ জুরে মেঘ বলাকা! সঙ্গী পরিজনে তোমার উড়ান কোন এক রঙিন দ্বীপে স্থান পায়। যোজন ব্যাপী দূরত্ত্বে ফ্যাকাসে চোখে আমার সূর্যোদয়। তীব্র জ্বালা বয়ে নিয়ে আমি শুরু করি আরেকটি দিন, আরেকটি বিনিদ্র রাত পাবার জন্য।

Thursday, October 05, 2006

নামহীন (০৫.১০.০৬)

এই মেয়ে, তুমি কী প্রজাপতি হতে পারো?
এক আঁজলা জোছনা এসে পড়লে তোমার শাড়ীতে,
তুমি কী মেলে দিতে পারো নীল-বেগুনী পাখা?

তুমি কী ভ্রমর হতে পারো মেয়ে?
বিকেলবেলার সোনালী রোদ মেখে আমি যখন ফুটি,
তুমি কী ছুটে আসো আমাকে নষ্ট করে দিতে?

তুমি কী রামধনু হতে পারো আকাশ জুড়ে?
সদ্যভেজা ঘাস আর গাছগুলো যখন খুব হাসে,
আকাশ বুকে জড়িয়ে তুমি কী রঙ ছড়াতে পারো?

নাকি তুমি ঘুনপোকা হতে পারো?
রাত্রিদিন নিঃশব্দে কুরে কুরে খাও আমায়,
বিবর্ণ আমার অস্থিধুলায় পড়ে থাকি আমি, অন্তঃসাড়শূন্য!

তুমি কী শিকারীর ছোঁড়া বুভুক্ষু বুলেট?
নীল আকাশে উড়ন্ত আমার বুকে হঠাৎ তীব্র সীসার ঝলক,
ভারী হয়ে আসা নিঃসাড় ডানা বেয়ে আমি ছুঁই মাটি।

নাকি তুমি এক শিকার পারদর্শী বাঘ?
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি সম্মোহিত, চোখে চোখ,
নিঃশব্দে মৃত্যুর ফিস্‌ফিস্‌ আমার কান ছুঁয়ে যায়, ধীর লহমায়।

বলো না মেয়ে, তুমি কী হতে পারো?
ব্যতীব্যস্ত প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে আমি ছুটি,
দিকভ্রান্ত হাওয়ায় পাল তুলে উড়ে যাই চিরহরিৎ পাতায় পাতায়।

ঘুনপোকা থেকে প্রজাপতির বিবর্তনের দূরত্ত্ব কতটুকু?
নীলচে ধোঁয়া মাখা জোছনায় গা ভাসিয়ে
রঙিন ডানা মেলা কী সত্যিই অতটা কষ্টকর?

তুমি কী পার না প্রজাপতি হতে?
তোমার ডানার রামধনু রঙে রাঙিয়ে দিতে পার না আমার রঙহীন পাঁপড়ি?
বিবর্ণ আমি রঙের আশায় অস্ফুটে চিৎকার করে যাই,
সত্যিই কী তুমি পার না একটিবার প্রজাপতি হতে?

Sunday, October 01, 2006

নামহীন (২৭.০৯.০৬)

তবু ভোর আসে তোমার চোখের আলোয়,
ভেসে আসে সকালের সুর তোমার চুড়িতে,
দিন শেষে আবার সূর্যোদয় হয় তোমার কপাল বেয়ে
দীর্ঘ চুলের ঢলে শুরু হয় নতুন রাত।

নিভৃত কত কথন রয়ে যায় অব্যক্ত দীর্ঘ পংক্তি শেষে
তোমার ভুরুর তীব্র ভ্রুকুটীর মাঝে আঁকা,
অথবা রাত শেষে তোমার ব্যকুল চিন্তিত চাহনি দেখে
আকুল সপ্তর্ষীমন্ডলের নিঃশেষিত রাত কেটে যায়।

ঘাম ভেজা একগুচ্ছ চুল তোমার গাল ছুঁয়ে থাকে,
কখনও বা ছুঁয়ে যায় সদ্য প্রস্ফুটিত গোলাপের মতো ঠোঁট দুটো,
অথবা আমার না বলা কথারা হাওয়ায় ভেসে,
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডেকে যায় দ্বিতীয়ার চাঁদ।

দীর্ঘ পথ চলা শেষে, পথ পাশে বসে শ্রান্ত আমি
একমুঠো শীতলতার আশায় খুঁজি তোমার আঁচলের প্রান্ত,
উদ্দাম সমুদ্রে ঢেউয়ের প্রান্তে ফুটে ওঠা সাদা ফেনা
অথবা তটে আছড়ে পড়া নিঃশব্দ ঢেউ তোমার প্রতীক।

ভেসে যাও তুমি আমার হৃদয়ের প্রান্ত বেয়ে,
ভেসে ওঠে নাবিকের দিকভ্রান্ত চাহনি,
সমস্ত কোলাহল থেমে গেলে আমি খুঁজি পথ বেয়ে
যে পথে ফেলে এসেছি আমার প্রতিটা পায়ের চিহ্ন।

ফিরে যেতে চাই আমি পুরানো গন্তব্যে, নির্দ্বিধায়,
ফেলে দিতে চাই মনের সমস্ত পিছুটান,
রাত শেষে ফিরে যেতে চাই আমি ঘরে
রাতজাগা পাখীদের মতো জাগরন শেষে, অবাধ বিচরনে।

তীব্র জ্বালার শেষে আমি খুঁজে পেতে চাই সেই বিষাক্ত কীট,
তীব্র বিষের দাহ যার আমার রক্ত প্রবাহে,
প্রতিটা মানুষ হয়তো বিছে হয়ে যায়
প্রতিরোধহীন, নির্দ্বিধায় কামড়ানোর সুযোগ পেলে।

অর্থহীন কিছু কথা নিয়মিত চলাচল করে হাত বেয়ে
অথবা হঠাৎ মুখ থুবড়ে পড়ে মাটিতে,
হাজার হাজার বক্তব্য অব্যক্তই থাকে, সবসময়,
কিছুকথা বুঝেও নির্জীব হয়ে থাকে চিরকাল।

তোমার আলেয়ার নেশায় ছুটেছি আমি সম্মোহীত,
রাত্রিদিন খুঁজেছি গন্তব্যশেষে সুখী গৃহকোন!
পথ মাঝে অথৈ দুরত্ব, ঘন অন্ধকার,
দিক ভূলে দিশেহারা তুমি, অথবা পরিত্যক্ত আমি!