Friday, March 07, 2008

নামহীন (০৭.০৩.০৮)

কিছু গোলাপী নরম রেশম, ভাবোনি কখোনো
গলায় ফাঁস হয়ে শ্বাসরোধ করবে।
ভাবোনি এতদিন দেখা সবুজ স্বপ্ন
ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করবে দিন-রাত্রি।

নির্মেঘ তারাভরা আকাশ ভাবোনি কখোনো
তরিৎপ্রবাহে পুড়িয়ে দেবে তোমার শরীর।
সাজানো বাগানের ফুলের কাঁটা যিশুর মতো
ক্রুশবিদ্ধ করবে তোমায়, ভাবোনি কখোনো।

হে পার্থ, দেখোনি কিছুই,
তোমার সামনে ঘটে যাওয়া তাৎক্ষনিক অভিনয়
ভেবে এসেছ জীবনের সুন্দরতম উপভোগ্য মুহুর্ত।
সিঞ্চিত করেছ নিজের হৃদয়
নির্মোঘ কিছু প্রলোভনে।

হে পার্থ, শোনোনি কিছুই,
তোমার কানে ফিস্‌-ফিস্‌ করে বলে যাওয়া বাতাসকে
ফিরিয়ে দিয়েছ বারবার নিদারুন অবজ্ঞায়।
কথার বেড়াজালে বন্দি হয়ে বানিয়েছ
বালির প্রাসাদ, মূর্খের মতো।

হে পার্থ, বোঝোনি কিছুই,
অন্ধবিশ্বাসে পথ চলেছ বুদ্ধিমত্তাকে পাশে সরিয়ে
হৃদয় আর মস্তিস্কের সংযোগ ছিন্ন করে।
তার প্রতিটা কথা ধ্রুব সত্য বলে মেনে এসেছ,
সত্যের আদলে মিথ্যা সংগ্রহ করে গেছ শুধু।

হে পার্থ, শেখনি কিছুই,
প্রেম আর যুদ্ধে সবই ন্যায়সঙ্গত!
যুদ্ধ আর প্রেমে তফাৎ নেই কিছুই,
যুদ্ধক্ষেত্রে দুইপক্ষের মধ্যে আড়াল থাকেনা কিছু
শুধু প্রেম থাকে ভালোবাসার মোড়কে!

Wednesday, March 05, 2008

নামহীন (০৫.০৩.০৮)

আস্তাকুঁড়ে বেঁচে থাকে সাদা-কালো পৃথিবী
খুঁটিয়ে খাওয়া মেয়েটার অভুক্ত পেটে,
দোকানের পাশে ফেলে যাওয়া স্যুট-টাই পরিহিত
লোকটির উচ্ছিষ্ট দিয়ে তার ক্ষুধা নিবারনে।

মেয়েটির শতছিন্ন নোংরা ফ্রক
চেটেপুটে নিতে চায় প্রতিটা খাদ্যকনা,
প্রখর সূর্যালোকেও দিনকে বড় ম্লান দেখায়
ঘূর্ণায়মান পৃথিবী সরে যায় কক্ষপথ থেকে
দূরে আরো দূরে!

আকাশের সমস্ত নীল ফিকে হয়ে যায়
বুভূক্ষু পেট গ্রাস করে সবকিছু একে-একে,
আমাদের ক্ষুধার্ত মন ছড়িয়ে দেয় ক্ষিদে
লক্ষ-লক্ষ পেটে, ক্রমাগত, দ্রুত।

নির্ভেজাল উল্লাসে ছড়িয়ে পড়া রঙিন তরল
অথবা প্লেটে পড়ে থাকা রাশি-রাশি খাদ্য
শুষে নেয় সব রঙ সবকিছু থেকে,
উজ্জ্বল রঙিন আলো ছুঁতে পারে না
সেই মেয়েটির মলিন মুখটাকে।

আমরা দেখি সাদা-কালো পৃথিবীটাকে
রঙিন কাঁচ দিয়ে, ভান করি রঙিন থাকার,
আর আচ্ছাদহীন ফুটপাথে ঘুমিয়ে থাকা মেয়েটির
নোংরা গালের অস্রুরেখায় চাঁদ ঢেলে দেয় রঙ,
ঘুমের দেশে মেয়েটি বোনে রামধনু
স্বপ্ন দেখে রঙিন থাকার, সবাইকে রঙিন রাখার!