Friday, July 28, 2006

নামহীন (২৯.০৬.০৬)

তীব্রতার তারতম্যে কিছু পার্থক্য ঘটে বইকি! নিশ্চিহ্ন বনস্পতির কষ বেয়ে গড়িয়ে পড়া শুকনো রক্তের দাগ মাটিতে বুক ঘষে চলা শুঁয়োপোকার বুকে স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন রেখে দেয়। অথবা মরুপ্রায় মাটির ফাটল থেকে বেড়িয়ে আসা দীর্ঘশ্বাস হয়ত মেঘসিক্ত করে শহরের কংক্রিট জঙ্গল। অন্তঃহীন চাহিদার ফলস্বরুপ স্তুপকৃত মৃতদেহ জায়গা নেয় শহীদবেদী থেকে শত মাইল দূরে বানিজ্যিক কোন ঘেরাটোপে। তীব্রতার তারতম্যে কিছু পার্থক্য ঘটে বইকি! বাস্তুহারা সেই নীল পাখিটার স্বপ্ন সবুজ ঘিরে থাকে কোন নামী সংস্থার জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন। শহুরে হওয়ার আপ্রান চেষ্টায় দীর্ঘয়িত হয় তার ছন্দবদ্ধ লয়। অত্যাশ্চরয প্রযুক্তির হাত ধরে তার ঘরের কোনে আজ প্রতিটা মুহুর্ত ভোর, কৃত্রিম! সূর্যোদয় ভ্রমে মাঝরাতে গেয়ে ওঠা তার সুরেলা সঙ্গীত শেষে প্রাপ্তি অশ্লীল শব্দবন্ধ অথবা ধেয়ে আসা পাথরের টুকরো। তার সহবাসী সেই কালো সাপটাও আজ স্থির, নিথর। বহুকাল আগে, এখানেই কোনো বনস্পতির শাখায় তার সন্তানের শেষকৃতঃ হয়েছিল সাপটার ক্ষুধা নিবারনে। তবুও আজ কোনো দূরত্ব নেই তাদের মধ্যে! শীতের আঘ্রাণ নেওয়ার প্রানপণ চেষ্টায় তাদের নাকের গর্ত থেকে ফুসফুসের প্রতিটা কোষে সীসা আর কার্বনের স্থায়ী ছাপ। আরও ভয়ঙ্কর কোনো করালগ্রাসে আজ তাদের আগত সমস্ত সন্তানেরা পঙ্গু বা মৃত। তারা মুখ তুলে আকাশের দিকে তাকায়। কালো ধোঁয়া জর্জরিত আকাশের বুক থেকে খুঁজে পেতে চায় তাদের হারিয়ে যাওয়া তারাগুলোকে। তাদের চোখের তারার প্রতিচ্ছবিতে আকাশ ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে লাল। সূর্যদয় আসন্ন! তাদের স্বপ্নদৃষ্টি বেয়ে শহরের প্রতিটা কংক্রিট আজ সবুজ। তীব্রতার তারতম্যে সত্যিই অনেক পার্থক্য ঘটে!

0 Comments:

Post a Comment

<< Home