Friday, July 28, 2006

নামহীন (০১.১১.০৪)

নিস্তব্ধতা ভেদ করে ভেসে আসে কিছু কল্পনা, মেঘপাখির ডানায় ভর করে। পুঞ্জিভূত শূন্যতার কালোমেঘ চিরে ঝলসে ওঠে সমস্ত আলোকে নিভিয়ে দেওয়া তরিৎশিখা। অসহ্য বজ্রশব্দ ছুঁয়ে যায় আমার হৃদয়ের প্রতিটি কোলাহলকে। নিথরতার তবু কিছু মানে থাকে! বুকের ভিতরের মৌচাকের প্রতিটা রন্ধ্র থেকে গলে পড়া প্রতিটা শুস্ক মোমবিন্দু অবয়বহীন কালো ছায়ার রূপরেখা ধরে পালাতে চায়। এক পৃথিবী মরুঝড় শ্বাসরোধ করে আমার। মুখগহ্বর, শ্বাসনালী বেয়ে বয়ে চলে শুস্ক হাওয়ায় ওড়া বালির পাহাড়। আমার ফুসফুসের প্রতিটা কোষে আর ঠোঁটে ধূসর বালি। হয়ত অসাবধানতাবশতঃ রয়ে গিয়েছিল কিছু সাদাকালো স্মৃতির অগোছাল জীবাস্ম। অশরিরী সেই প্রানহীন খড়কুটো জড়ো হয়ে ছুঁতে চায় আমার প্রতিটা অসংলগ্ন পদক্ষেপ। জানি কোনদিনই আমি ছাড়পত্র পাব না এই সব অন্তরঙ্গ নিস্তেজতা থেকে। প্রতিরাত্রে প্রহর শেষে গতিহীন মেঘযান আমার মৃত্যুলগ্নের আতিথেয়তা গ্রহন করবে। অসংলগ্ন বহু প্রলাপ আমাকে জড়িয়ে থাকবে প্রতিটা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। ছুঁয়ে যাবে আমার মস্তিস্কের প্রতিটা স্নায়ু, শিরা-উপশিরা। মনের প্রতিটা কক্ষের অর্দ্ধন্মোচিত দরজার ফাঁক দিয়ে বয়ে যাবে হাহাকার ঝড়। অথবা নিস্পেষিত বিষগন্ধ আমার নাশারন্ধ্র দিয়ে প্রবেশ করে আমাকে মৃতপ্রায় করে তুলবে। তবু আমি স্বপ্ন দেখি! মাঝ সমুদ্রে প্রবল ঝঞ্ঝার মাঝে প্রাণপনে আঁকড়ে থাকি পালটাকে, এই আশায় যে কখনও হয়তো ঝড়জল শেষে আমার শুস্ক মুখ ছুঁয়ে যাবে মৃদুমন্দ সাগরের নোনা হাওয়া। হয়তো কোনও একদিন প্রবল চেষ্টার পরে ঘুম নেমে আসবে আমার শরীরে। মৃদু পালকের মতো ভেসে যাব স্বপ্নের হাওয়ায়। হয়তো কোনওদিন ভেসে বেড়াব কোনও এক মিষ্টি মেঘের পাশে পাশে, অনুভব করব তোমার শরীরি গন্ধকে। হয়তো কোনওদিন সেই মেঘ বাড়িয়ে দেবে আমার দিকে তার স্নিগ্ধ পেলব হাত। আবার ফিরে পাব প্রাণ আমার এই অশরীরি শরীরে!

0 Comments:

Post a Comment

<< Home